Up to date result, admission news, visa, job, private job govt job circular are available. We work for people as soon as they can get their urgent news and helping them in their way.

Saturday, July 15, 2017

বিশ্বাস ভয়ঙ্কর

‘ভাই, বিদেশি ট্যাবলেট খাইয়ে ভাবীর সঙ্গে আমি সেক্স করেছি। আপনি তাড়াতাড়ি ওনারে ডাক্তার দেখাবেন। নইলে ওনার কিডনিতে সমস্যা হতে পারে। ’ মোবাইলে পাঠানো এই খুদেবার্তার (এসএমএস) পর আরেকটি বার্তায় বলা হয়, ‘যত দ্রুত সম্ভব আমাকে এক কোটি টাকা দেন। র‌্যাব-পুলিশকে ইনফর্ম করার কথা চিন্তা থাকলে তা মাথা থেকে ফেলে দেন। নইলে আপনাদেরই বিপদ হবে। তিন ঘণ্টার মধ্যে ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়া হবে। আর আমার বসেরা বলছে, ওই ভিডিও দিয়ে ব্লু-ফিল্ম তৈরি করতে। এখন আপনার টাকার ওপর সব নির্ভর করবে। ’ 
অন্যদিকে সম্প্রতি চট্টগ্রামে এক নারীকে  ফেসবুকে ভিডিও কথোপকথন এডিট করে ইউটিউবে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল বেপজা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র মো. ইমরান সরকার। ৯ জুলাই চান্দগাঁও থানার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে গাইবান্ধা থেকে গ্রেফতার করে। পুলিশ বলছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের অপব্যবহারে চলছে ভয়ঙ্কর সব প্রতারণা। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি চক্রের সন্ধানও পেয়েছে পুলিশ। মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট এলিনা খান বলেন, ‘আমাদের সমাজে সম্পর্কের ক্ষেত্রে সততার অভাব দেখা দিয়েছে।
 এর অন্যতম কারণ নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয়। আচরণ দেখেই বোঝা উচিত, সে আমার প্রকৃত বন্ধু কি না। পরিবারের সবাইকে এসব বিষয়ে সচেতন হতে হবে এবং পারিবারিক বন্ধন ও নৈতিকতাকে মজবুত করতে হবে। ’ জানা গেছে, শাহ মো. মুজাহিদ নামের ওই যুবককে গত বছর আগস্টে নিজের দুই সন্তানের গৃহশিক্ষক নিয়োগ দিয়েছিলেন রাজধানীর ভাটারা এলাকার ব্যবসায়ী মামুন। অনেকটা নিজ সন্তানের মতো মনে করে ওই গৃহশিক্ষককে নিজ ফ্ল্যাটেই থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন তিনি। পরিবারের অন্য সদস্যদের মতোই অবস্থান ছিল মুজাহিদের। 
তবে মুজাহিদের চোখ পড়ে মামুনের অর্থবিত্তের দিকে। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী গৃহকর্ত্রীর সরলতার সুযোগে জুসের সঙ্গে নেশাজাতীয় যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট খাইয়ে গৃহকর্ত্রীকে তিনি ধর্ষণ করেন। ধর্ষণদৃশ্যের ভিডিও দেখিয়ে ওই দিনই বাসায় থাকা নগদ ৬০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন মুজাহিদ। ধারণকৃত ভিডিওর ভয় দেখিয়ে টানা সাত দিন তিনি ওই মহিলাকে ধর্ষণ করেন। গৃহকর্তা মামুন অসুস্থতার কারণে ওই সময় এ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। 
হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরার পর গৃহকর্তা মামুনকে অশ্লীল ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে এক কোটি টাকা দাবি করেন মুজাহিদ। বিষয়টি পুলিশ কিংবা র‌্যাবকে অবহিত করলে পরিণাম আরও খারাপ হবে বলে হুমকি দেন তিনি। গৃহকর্ত্রীর স্বামী ও মামলার বাদী মামুন বলেন, একপর্যায়ে ভাটারা থানা পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি। চলতি বছর ১১ জানুয়ারি ভাটারা থানায় শাহ মো. মুজাহিদ, শাহ মো. মুশাহিদ ও মো. জুবায়েরকে আসামি করে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করলে পুলিশ প্রথম দুই আসামিকে গ্রেফতার করে। 
তদন্তে ছয়জনের সংশ্লিষ্টতাসহ সব ধরনের প্রমাণ পাওয়ার পর চার্জশিটও প্রস্তুত করা হয়। তবে চার্জশিট আদালতে দাখিল করা নিয়ে হঠাৎ করেই পাল্টাতে থাকে দৃশ্যপট। রহস্যজনক আচরণ শুরু করেন তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা। সর্বশেষ চার্জশিটের বদলে পুলিশ আদালতে মামলার ফাইনাল রিপোর্ট জমা দিচ্ছে বলে বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মোস্তাক আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিন বলেন, তদন্তে যা পাওয়া যাবে সে অনুসারেই চার্জশিট আদালতে জমা দেওয়া হবে। মামলার তদন্তে একজনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে, আসামি মুজাহিদ একটি পর্নোগ্রাফি গ্যাংয়ের সদস্য। এর আগেও এই গ্রুপের সদস্যরা অনেক নারীর সরলতার সুযোগ নিয়ে তাদের ব্ল্যাকমেইল করে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছে। 
অশ্লীল এসব দৃশ্যের ভিডিও ধারণ করে পর্নো ছবিও তৈরি করেছে তারা। এই গ্রুপের একজন সক্রিয় সদস্য তার সহোদর মুশাহিদ। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই পুলিশের কাছে এসব স্বীকার করেছেন মুজাহিদ। তিন দফায় আট দিনের রিমান্ডে আদায় করা তথ্যের ভিত্তিতে মুজাহিদের গ্রামের বাড়ি থেকে একটি মুঠোফোন, একটি পেনড্রাইভ ও একটি মেমোরি কার্ড উদ্ধার করেছে পুলিশ। মেমোরি কার্ডে অপর একজন নারীর সঙ্গে অভিযুক্ত মুজাহিদের সেক্স ভিডিও পাওয়া গেছে। উদ্ধার আলামতগুলো এরই মধ্যে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের ফরেনসিক ল্যাবরেটরি থেকে পরীক্ষা করা হয়েছে। 
পরীক্ষার প্রতিবেদনেও ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজধানীর বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি বিভাগে মাস্টার্স পাস করা মুজাহিদ ৩৬তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। অন্যদিকে ধর্ষণের প্রথম দিন সন্ধ্যায় ধর্ষিতার তিন ছেলেমেয়েকে নিয়ে মুজাহিদ ৩০০ ফুট রাস্তার কাঞ্চন ব্রিজ এলাকায় ঘুরতে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে গাড়িচালক হাসানসহ তিন সন্তানকে তার গ্যাংয়ের অন্য সদস্যরা আটকিয়ে রাখে। ওই সময় মুজাহিদ বাসায় ফিরে এসে কৌশলে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে গৃহকর্ত্রীকে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণ শেষে মুজাহিদ কাঞ্চন ব্রিজ থেকে পুনরায় ধর্ষিতার তিন সন্তানসহ গাড়িচালককে বাসায় নিয়ে আসেন। 
এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর বড় মেয়ে (৮) এবং গাড়িচালক হাসান কাঞ্চন ব্রিজ এলাকায় তাদের দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখার বিষয়টি এ প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন। মামলার বাদী মামুনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খোকন নামে এক ব্যক্তি গৃহশিক্ষক হিসেবে মুজাহিদের তথ্য দিয়েছিলেন। মুজাহিদ তখন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা করতেন। গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট থানার নরপতি শ্রীকুটা ফকিরবাড়ী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেন, শারীরিক সম্পর্ক বা ধর্ষণ করে তা ভিডিও করে ব্ল্যাকমেইল করা সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হচ্ছে। এর থেকে বাঁচতে পাশ্চাত্যের অন্ধ অনুকরণ বন্ধ করতে হবে। সবার সচেতনতা বৃদ্ধি ও আইনের সঠিক প্রয়োগ করতে হবে।

0 comments:

Post a Comment

Add format

Anti Adblock++

PopCash

Weather

Popular Posts

Blog Archive

Powered by Blogger.